মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এলাকায় বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) বেশআনুষ্ঠানিক ভাবে বন্যপ্রাণী দিবস পালণ করা হয়। আর এই দিন বিকালে জাতীয় উদ্যানে দূর্ঘটনায় প্রাণ গেছে দুই বন্য প্রাণীর।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪ টার দিকে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের বন্যপ্রানী রেসকিউ সেন্টারের চলমান ৩৩ হাজার কেভি বিদ্যুৎ লাইনে বিদ্যুতায়িত হয়ে একটি মুখপুড়া হনুমান মরে রাস্তায় পড়ে থাকে। একই সময়ে ৯ মাসের সন্তানসহ রাস্তা পারাপারকালে একটি দ্রুতগতির মোটরসাইকেলের ধাক্কায় একটি উল্টো লেজি বানর মারা যায়।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে বন্যপ্রাণী দিবস উপলক্ষে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের সড়ক পারাপারে যানবাহনের নিচে কাটা পড়ে বন্যপ্রাণীর মৃত্যুরোধে যানবাহনের গতিসীমা ২০ কি.মি. এ সীমিত রাখতে বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবসে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচীর উদ্বোধন করা হয়েছিল। আর এ দিবসে বিকেল ৪টায় বন্যপ্রানী রেসকিউ সেন্টারের কাছে বিদ্যুতায়িত হয়ে একটি মুখপুড়ো হনুমান ও দ্রুতগতির একটি মোটরসাইকেলের ধাক্কায় মর্মান্তিকভাবে একটি উল্টো লেজি বানরের মৃত্যু হয়।
ঘটনার খবর পেয়ে বন্যপ্রানী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ও বন সংরক্ষক মির্জা মেহেদী সারওয়ার দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে মৃত দুটি বন্যপ্রানী উদ্ধার করেন। পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে দুটি প্রাণীকে মাটি চাপা দেন। আর উল্টোলেজি বানের বাচ্চাকে বন্যপ্রানী রেসকিউ সেন্টারের সেবা কেন্দ্রে নিয়ে যান।
এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন সংরক্ষক মির্জা মেহেদী সারওয়ার বলেন, ঘটনাস্থলে এসে এ দুটি মৃত বন্যপ্রাণীকে দেখে তিনি কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন, এ বনের বন্যপ্রানী রক্ষায় সব ধরণের উদ্যোগ গ্রহন করছেন। আজ বন্যপ্রানী দিবসও পালন করে বেশ কিছু সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করলেন। আর একই দিনে বিকেলে বনের ভেতর দুটি প্রাণীর মৃত্যু হলো। তা কখনও তিনি মেনে নিতে পারছেন না।
বন্যপ্রানী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বেঁচে থাকা শিশু উল্টো লেজি বানরকে কোলে নিয়ে দীর্ঘ সময় তিনি বনে ছিলেন। তিনি আরও বলেন, এ উদ্যানের ভেতরের রাস্তায় চলা যানবাহন, রেলপথ ও বৈদ্যুতিক লাইন বন্যপ্রাণীল জন্য হুমকি এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বার বার পত্র প্রেরণ করেছেন। বন্যপ্রাণী রক্ষায় বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহনের চেষ্টা করছেন। এরই মাঝে একই সময়ে এক সাথে দুটি বন্যপ্রাণীর মৃত্য বড় বেদনাদায়ক। এভাবে চলতে থাকলে একদিন বনে আর কোন প্রাণী খুঁজে পাওয়া যাবে না।