বর্তমানে সরবরাহকৃত বীজে লোকসানে কমলগঞ্জের চাষীরা
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) কাছে সরবরাহকৃত উৎপাদিত বীজের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে লোকসান গুনছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার চুক্তিবদ্ধ চাষীরা। বর্তমানে দ্রব্যমূল্যেল উর্ধ্বগতির বাজারে বিএডিসি বীজের যে দাম দেয়ার সিদ্ধান্ত করেছে তাতে উৎপাদন খরচই উঠছে না বলে চাষীরা দাবি তুলেছেন। বোরো ধান বীজের দর পুণ:নির্ধারণের জন্য সম্প্রতি বিএডিসি’র সিলেটস্থ উপ-পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কমলগেঞ্জর চুক্তিবদ্ধ চাষীরা।
বীজ উৎপাদনকারী চাষীরা জানান, গত ধান বীজের প্রদানকৃত দর ২০২২-২৩ উৎপাদন বর্ষে তাদের জন্য বীজ উৎপাদন ব্যয় মিটানো সম্ভব হচ্ছে না। গত পাঁচ জুলাই সিলেট জোনের উপ-পরিচালকের কাছে আবেদনের প্রেক্ষিতে বীজ ধানের কেজি প্রতি এক টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে চাষীরা এক টাকা বৃদ্ধিতে লোকসান কোনমতেই কাটিয়ে উঠা সম্ভব নয়।
দ্রব্যমূল্য যখন আকাশচুম্বি সেখানে ধান বীজ সংগ্রহে দর নিম্নমুখী
কমলগঞ্জের চুক্তিবদ্ধ চাষী নগেন্দ্র কুমার সিংহ, আতিকুল ইসলাম, মোবাশ্বির আলী বলেন, সারাদেশে দ্রব্যমূল্য যখন আকাশচুম্বি, সরকারের ধান, চাল সংগ্রহে দাম বৃদ্ধি সেখানে ধান বীজ সংগ্রহে দর নিম্নমুখী করায় চুক্তিবদ্ধ চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ইতিমধ্যে অনেকেই ক্ষুব্ধ ও হতাশ হয়েছেন। এতে ধান বীজ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তারা আরো বলেন, ১৯৮১ সালের নিয়মে বিএডিসি কর্তৃপক্ষ দর নির্ধারণ করেছে। পক্ষান্তরে বীজ সরবরাহের ক্ষেত্রে বিএডিসি গ্রেডিং চার্জ কেজি প্রতি ১৫ পয়সা থেকে ৪ গুণবৃদ্ধি করে ৬০ পয়সা করেছে। অথচ যে প্রক্রিয়ায় দর ধার্য করা হয় সেবিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তর নজরদারি না করে আগের নিয়মে দর ধার্য করেছেন।
ধান বীজ সরবরাহের ৩ থেকে ৭ মাস পর বিল প্রদান করা হয়
কৃষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ধান বীজ সরবরাহের ৩ থেকে ৭ মাস পর বিল প্রদান করা হয়। এতেও আমরা চুক্তিবদ্ধ চাষীরা আরো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। অথচ চাল-ধান সংগ্রহের পর সাথে সাথে বিল প্রদান করা হয়। চুক্তিকালে ধানের কোন দর নির্ধারণ করা হয় না। বর্তমানে জমি লিজ, সেচ, সার, কীটনাশক, শ্রমিকের মজুরিসহ আনুষঙ্গিক খরচাদি উর্ধ্বমুখী। সবমিলিয়ে বর্তমানে বীজ উৎপাদন খরচের তুলনায় চুক্তিভিত্তিক চাষীদের কম মূল্য দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে ধান বীজের উৎপাদন ব্যয়ের সাথে সঙ্গতি রেখে কেজি প্রতি ৫২ থেকে ৫৪ টাকা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। বীজের মূল্য দেরীতে ও তিন কিস্তিতে না দিয়ে বীজ ধান সংগ্রহের দ্রুত সময়ের মধ্যে এক কিস্তিতে বিল প্রদানের দাবি জানান তারা। আগামীতে বীজধান সংগ্রহের পূর্বে বীজের যথাযথ মূল্য নির্ধারণ করে বীজধান সংগ্রহ করার জন্যও কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি তুলেন।
এ ব্যাপারে বিএডিসি’র সিলেট বিভাগীয় উপ-পরিচালক আশুতোষ দাস বলেন, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখেন। আমাদের কাছে চাষীদের অভিযোগের বিষয় আমরা সেখানে পাঠিয়ে দেই।
নিউজটি শেয়ার করতে বাটনের উপর ক্লিক করুন