প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ।। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে কৃষকদের মধ্যে শীতকালিন মৌসুমী সবজি চাষের ধুম পড়েছে। শীতের শুরুতেই বাজারে শীতকালীন শাকসবজি বাজারে তুলতে পারলেই অধিক টাকা উপার্জন করা সম্ভব বলে চারা তৈরি ও জমি পরিচর্যায় ব্যস্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা।
জানা যায়, ভালো ফলন হলেও ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় এবার বেশি লাভের আশায় শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কমলগঞ্জের চাষিরা। তারা ক্ষেত পরিচর্যা, রোগ-বালাই দমন ও অধিক ফলনের আশায় নাওয়া খাওয়া ভূল দিনরাত হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেছেন। এবার উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৯ টি ইউনিয়নে ১ হাজার ৫শ ৩০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হচ্ছে। বেগুন, মুলা, টমেটো, শিম, বরবটি, শসা, লাউ, কুমড়া, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ক্ষীরাসহ বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করার লক্ষ্য নিয়ে কৃষকরা মাঠে নেমেছে। উপজেলার ভানুগাছ, পতনউষার, আদমপুর, মাধবপুর, রানীরবাজার ও মুন্সীবাজার এলাকায় ব্যাপকহারে শাকসবজি চাষ হয়। সাম্প্রতিক সময়ের সবজির বাজার দর বিশ্লেষণ করে চাষিরা সবজি চাষ করে লাভবান হওয়ার আশায় তারা শীতকালিন সবজি চাষে ঝুঁকে পড়েছে। সবজির মধ্যে রয়েছে মুলা, বেগুন, শিম, ফুলকপি, বাঁধা কপি, লালশাক, তিতা করলা, টমেটো, ঢেরশ, পালংশাক ও পুঁই শাক ইত্যাদি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এক মাসের মধ্যেই ক্ষেত থেকে উঠবে শীতকালীন শাকসবজি। বেশি লাভ ও বাম্পার ফলন হবে এমনটাই প্রত্যাশা চাষি ও কৃষি বিভাগের।
সরেজমিন কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, চাষিরা ব্যাপকহারে শীতকালীন সবজি চাষ করছে। চারা তৈরি থেকে শুরু করে শাকসবজি রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন এলাকার চাষিরা। পুরুষদের পাশাপাশি ঘরের নরীরাও একযোগে কাজ করছেন মাঠে।
পতনঊষার এলাকার কৃষক তোয়াবুর রহমান, লক্ষ্মীপুর গ্রামের কৃষক সুনীল দেবনাথ, যোদ্ধাপুর গ্রামের কৃষক কাজল মালাকার বলেন, ধানের ভালো ফলন হলেও ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় এবার শীতকালীন সবজি চাষে নেমেছি। তাই নাওয়া-খাওয়া ভুলে দিনরাত শ্রম দিচ্ছি সবজিক্ষেতে। সময়ের মধ্যে যদি সবজি তুলতে পারি তবে আশা করছি লাভবান হবো।
স্থানীয় কয়েকজন কাচাঁমাল ব্যবসায়ী জানান, বর্তমানে বাজারে চড়া দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে। যে কোনো সবজি যদি মৌসুমের শুরুতে বাজারে তোলা যায়, তবে তার দাম বেশি পাওয়া যায়।
সবজি চাষি মনির মিয়া বলেন, এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় সবজির ভালো ফলন হবে। উপজেলার অনেক বেকার যুবক চাকরির দিকে না ঝুঁকে নেমে পড়েছেন মৌসুমী সবজি চাষে। এখন সবজি কম পাওয়া গেলেও মাসখানেকের মধ্যে ভরপুর হবে কমলগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অ লের বাজারগুলোতে। দাম কিছুটা বেশি হলেও ভোক্তারা স্বাদ নেবে এসব সবজির।
এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ রায় জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সবজির বাম্পার ফলন হবে। এলাকার মাটি অনেক উর্বর তাই ফলন বেশি। ভালো ফলনের লক্ষ্যে কৃষি অফিস সার্বক্ষণিক তদারকি করছে। মাঠ পর্যায়ে মাঠকর্মীরাও কাজ করছেন। কৃষি কর্মকর্তারা ও মাঠ কর্মীরা মাঠে কৃষকদের ভাল সবজি উৎপাদনের পরামর্শ দিচ্ছেন।